| | বঙ্গাব্দ

মদিনার ইসলাম বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে

 

মদিনার ইসলাম বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে

ইসলাম আল্লাহতায়ালার এক মাত্র মনোনীত ধর্ম। ইসলাম সমগ্র মানব জাতির জন্য। ইসলামই শিক্ষা দেয় আল্লাহতায়ালার সৃষ্টি হিসেবে সমগ্র সৃষ্টিকে ভালবাসতে। 

কোরআন মাজিদকে আল্লাহতায়ালা সমগ্র মানব জাতির জীবন বিধান হিসাবে নিবার্চিত করছেন। ইসলাম ধর্ম ই শিক্ষা দেয় প্রেম-ক্ষমা, অন্য ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা, নিরন্নের অন্ন, বাসস্থানহীনের বাসস্থান। ইসলাম প্রেমের ধর্ম, ভালোবাসার ধর্ম। 

আর এই প্রেমের ধর্ম, ক্ষমার ধর্ম ইসলামের প্রবর্তক দয়াল নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)।


কারবালার পরে আরব  শাসক গোষ্ঠি সাধারন মুসলমানগনের মন থেকে দয়াল নবী (সাঃ) এঁর প্রতি মহব্বত, সাহাবায়ে কেরামগনের প্রতি আদব প্রর্দশন কে বন্ধ করে ন্যায় নীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু করে। 

তখন নবী প্রেমিক মুসলমান দিশেহারা হয়ে পড়ে। নবী প্রেমিক মুসলমানগন ধীরে ধীরে পারস্যে দিকে আবসস্থল গড়ে তুলেন। 


মদিনার প্রেমময় ইসলাম, ক্ষমার ইসলাম চলে গেলো পারস্য। এই পারস্যে জন্মগ্রহন করলেন হযরত বায়েজিদ বোস্তামি, রুমি (রহঃ), মহাকবি হাফিজ, মহাকবি ফেরদৌস, ওমর খৈয়াম সহ অনেক মহা মনিষী।


মদিনার ইসলাম আউলিয়া কেরামগনের মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। হযরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহঃ) মাধ্যমে মদিনার প্রেমময় ইসলাম সারা ভারত উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।


বর্তমান বিশ্বে মদিনার  প্রেমময় ইসলাম আর কোথায় থাকুক বা না থাকুক তা বিশ্ব জাকের মঞ্জিল আটরশি পাক দরবার শরীফে বর্তমান।

আটরশি দরবার শরীফ। আটরশি সম্পূর্ন স্বতন্ত্র এক পৃথিবী। এখানে হিংসা নেই, নেই দ্বেষ, নেই পাপ,  পংকিলতা। সবাই পরস্পরের ভাই। সবার মুখে আল্লাহর নাম, চোখে দয়াল নবী (সাঃ) এঁর মহব্বতের পানি। 


হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এঁর আদর্শেই, কোরআন-সুন্নার ভিত্তিতে ই গড়ে উঠেছে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল। ব্যবহারিক বা বস্তুগত যেই অর্থে আপনি নেন সত্যিকার ইসলামের জীবন ব্যবস্থার দর্শন মিলে এখানে। 


যারা ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চান, যারা ইসলামের লুপ্ত গৌরব পুনরুদ্ধার করতে চান, তাদের একমাত্র শিক্ষার স্থান, অনুপ্রেরনার স্থল বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়েও বড় বিদ্যাপিঠ বিশ্ব জাকের মঞ্জিল। 


আধুনিক বিশ্বে কোথাও মদিনার ইসলাম নেই, আছে শুধু ধর্মের বেসাতি। বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের মহামহিম প্রতিষ্ঠাতা হযরত বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব বলেন," আমার জানামতে কোনো আর্দশ ইসলামী রাষ্ট্র নেই। আমি কোনো দেশে যাইনি, সব খানেই খবর শুনি মারামারি হানাহানি চলছে"।


ইসলাম সাম্য, শৃংখলা। বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে রাষ্ট্রপতি থেকে পথের ফকির সবাই সমান। এখানে আশরাফ-আতরাফের ভেদাভেদ নেই। 


সবাই নগ্ন পায়ে চলাফেরা করে। চিকিৎসা বিজ্ঞান প্রমান করে নগ্ন পায়ে চলা হাঁটা-চলা করা স্বাস্থের জন্য উপকারি। 


এখানে সবাই সেচ্চাশ্রমে কায়িক পরিশ্রম করে। 


পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। এত বিশাল দরবার শরীফের কোথাও আপনি একটি খুড়কুটো পড়ে থাকতে দেখবেন না।


দয়াল নবী (সাঃ) এঁর নিকট সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, "ইয়া রাসূল্লাহ! ইসলামে কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাতের পর অবশিষ্ট ভালো কাজ কোনটি? রাসূল (সাঃ) ফারমান, " মানুষকে অন্নদান বা মেহমানদারী করা"। বর্তমান দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মেহমানদারি বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে অনুষ্ঠিত হয়।


বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে খোলা-খুলি ধুমপান নিষিদ্ধ। ধূমপানের কারনে সারা দুনিয়া লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যায়। খোলা-খুলি ধুমপান নিষিদ্ধ করা সারা দুনিয়াতে সম্ভব হয় নি তা সম্ভব হয়েছে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে।


বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে কোনো ঝগড়া-বিবাদ নেই, কোনো ফ্যাসাদ নেই। এমনকি কেউ উচ্চস্বরে কথা বলেনা।


রোগীর চিকিৎসার জন্য এখানে আছে সুবিশাল হাসপাতাল।


এখানে আছে স্বনিভর্তার জন্য গরু-ছাগলের খামার, ফিশারিজ, খাদ্য মজুতের জন্য গুদাম বাড়ি। এখানে সেচ্চায় কৃষি কাজ করা হয়।


বিশ্ব জাকের মঞ্জিল রয়েছে সুন্নি আলেম গড়া জন্য  স্বর্নপদক প্রাপ্ত সু-বিশাল আলীয়া মাদ্রাসা।


আছে ইসলামী গবেষনা কেন্দ্র, শরিয়াহ বোর্ড।


এখানে আছে ব্যাংক, ডাকঘর সেই সাথে আছে পাকা মুসাফিরখানা।


আছে সুবিশাল এতিম খানা।


লক্ষ লক্ষ নারীদের নিরাপত্তা সহকারে আলাদা থাকাবার, খাবার ও জরীরু চিকিৎসা ব্যবস্থা।


আছে লক্ষ লক্ষ অন্যধর্মের মানুষের নিরাপদ থাকা-খাওয়া ব্যবস্থা।


বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের কর্মসূচী শুরু হয় প্রতিদিন রহমতের ঘন্টা দেয়ার মাধ্যমে। এই ঘন্টার শব্দে মনে হয় আধ্যাত্নিকতার পাঠশালার ক্লাস শুরু হয়েছে।


বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের মহামহিম প্রতিষ্ঠাতা হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের শিক্ষা মত সকলে শেষ রাতে মহান খোদাতায়ালাকে ডাকেন। মাঝে মাঝে দয়াল নবী (সাঃ) চোঁখে পানি নিয়ে সকলে ডাকেন। 


হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্নিত হযরত রাসূল (সাঃ) ফরমান, " আমাদের প্রতিপালক প্রতি রাতের যখন শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকে তখন প্রথম আসমানে অবতরন করেন এবং বলতে থাকেন, হে বান্দা! আমার কাছে প্রার্থনা করো, আমি তোমার প্রার্থনা কবুল করব। আমার কাছে তোমার কি চাওয়া আছে, চাও,  আমি দান করব। আমার কাছে তোমার জীবনের গুনাহর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর, আমি তোমার গুনাহ মাফ করে দিবো"। 

-বুখারীঃ ৬৯৮৬


জাকেরান -আশেকানগনের নিকট এই সময় রহমতের সময় নামেই পরিচিত।


তারপর প্রতি ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে অনুষ্ঠিত হয়।  


ফজরের নামাজের পর পাক কলাম ফাতেহা শরীফ পড়া হয়। ফাতেহা শরীফের পর দয়াল নবী (সাঃ) এঁর শিক্ষা দেয়া " জান্নাতের গুপ্ত ধন" " লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লা " ৫০০ বার পড়া হয়।


রাসূল (সাঃ) কদমে সাহাবায়ে কেরাম নজরানা দিতেন। ১৪৫০ বছর পর তিঁনার নায়েব বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব তিঁনার মুরিদাগনকে শিক্ষা দিলেন দয়াল নবী (সাঃ) কেঁ রাতে ঘুমানোর পূর্বে নজরানা দিয়ে ঘুমানার জন্য।


হযরত পীর কেবলাজান বলেন, " মানুষ হইতে হবে মানুষ যখন"। আর এই মানুষ হবার শিক্ষা বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে দেয়া হয়।


আপনি যদি নিজের জীবন পরিচালনার জন্য আদব শিখতে চায় আপনাকে অবশ্যই বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে যেতে হবে। আদব শিক্ষার একমাত্র জায়গা বিশ্ব জাকের মঞ্জিল।


শৃংখলা শিখতে চান?  বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে যান। আপনি দেখবেন সেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ এক সাথে শৃংখলিত ভাবে খাবার খাচ্ছে। কোনো টু-শব্দটিও নেই।


শৃংখলা, ভদ্রতা, ভ্রাতৃত্ববোধ, সাম্য, ন্যায়, নীতি, আদব, শিষ্টাচার শিক্ষাজন্য বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে আসতে হবে।


"মান আরাফা নাফসাহু ফাকাদ আরাফা রাব্বাহু" নিজকে চিনার জ্ঞানের কেন্দ্রস্থল বিশ্ব জাকের মঞ্জিল।


এখানে খোদাতালাশীদের ভীড় লেগে থাকে। 


বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের দৃষ্টান্ত অনুসরন করলে বিশ্বে থাকবে না ক্ষুধা, থাকবে না দারিদ্র, থাকবে না হিংসা-বিদ্বেষ, জ্বরা-ব্যাধি। পৃথিবী হবে শান্তিময়। ইসলামের আর্দশ হবে প্রতিষ্ঠিত ও পরিপূর্ণ। 


বিশ্ব জাকের মঞ্জিল বিশ্ব মানবতার মুক্তির পথ।

বিশ্ব জাকের মঞ্জিল অন্ধকারাচ্ছন্ন বিশ্বের আলোকবর্তিকা।

বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সূফিবাদের আধ্যাত্নিক রাজধানী।

বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ইসলামী পূর্ণ জীবনের পীঠস্থান। মহামানবের মহামিলনের তীর্থভূমি।


ফ্যাতানা-ফাসাদের যামানায়,  মুসিবতের যামানায় সকল ভেদাভেদ ভূলে আল্লাহপাককে  পাওয়া উদ্দেশ্যে, রাসূল্লাহ (সাঃ) মহব্বত অর্জনের জন্য, নিজ কে চিনার জন্য,  জ্ঞান অর্জনের জন্য একবার বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে ঘুরে আসুন।


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন