আমার দরদী বান্ধব, আমার পথের দিশারী শাহসূফী হযরত মাওলানা খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব ফরমান,"মানুষ হইতে হবে মানুষ যখন।" তিঁনার এই মহান বানী নিয়ে দুটি কথা বলার ক্ষুদ্র প্রয়াস।
মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব। আবার মানুষকেই স্বয়ং আল্লাহতায়ালা চতুষ্পদ জন্তুর থেকে নিকৃষ্ট বলে অভিহিত করেছেন। এই বিপরীত ধারার দু'টি অবস্থা সৃষ্টি হয় সাধারনত মানুষের কর্মভেদে। মানুষ যখন মহান আল্লাহতায়ালার ও রাসূল (সাঃ) এঁর নির্দেশিত পথে চলে তখন আশরাফুল মাখলুকাত আর যখন নাফসের গোলামী করেন তখন সে পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট।
মহান আল্লাহপাক মানুষকে "মানুষ" হওয়ার জন্য পবিত্র কোরআন মাজিদে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন যেমনঃ
⭕"মানুষের নিঃস্বার্থ উপকার করো" (সূরা-বাকারা-২৬৪)। কিন্তু বর্তমান সময়টা এমন যে মানুষ তার স্বার্থ ছাড়া একচুল পরিমান উপকার করতে রাজী না। ঐ সব মানুষকে কি "মানুষ বলা যায়?
⭕ "অন্যের বিপদে সাহায্য করো"(সূরা-বাকারা-২৭৩)। অন্যের বিপদে বর্তমানে সময়ে সেলফী তুলতে মানুষ বড্ড ব্যস্ত থাকে অথবা পাশ কেটে চলে যায়। তারা মানুষ হয় কিভাবে?
⭕ "পরনিন্দা পরিহার করো" (সূরা-বাকারা-২৮৫)। পরনিন্দা, পরচর্চা ছাড়া আমাদের সময়ই কাটতে চায় না।
⭕ "কোমলভাষী হও" (সূরা: আল-ইমরান-১৫৯)
⭕ "সদাচারী হও"(সূরা:নিসা-৩৬)
⭕ "কৃপন হয়ো না"( সূরা:নিসা-৩৭)
⭕ "বিদ্বেষ পরিহার করো।" (সূরা: নিসা-৫৪
⭕ "ন্যায় বিচার করো।"(সূরা নিসা-৫৮)
⭕ "সঠিক ওজনে লেনদেন করো"(সূরা আনআম-১৫২)
⭕ "অন্যের ত্রুটি বিচ্যুতি ক্ষমা করো"(সূরা আরাফ-১৯৯)
⭕ "নম্র ভাষায় কথা বলো।"( সূরা ত্বহা-৪৪)। অথচ নম্র ভাবে কথা বলতে আমরা ভুলেই গেছি!!
⭕"অনথর্ক কাজ থেকে বিরত থাকো"(সুরা মুমিনুন-৩)
⭕ "বিনম্র হয়ে চলা ফেরা করো" (সূরা ফোরকান-৬৩)
⭕ "কন্ঠ স্ব নিচু রাখো। (সূরা লোকমান-১৯)
⭕ "কাউকে উপহাস করো না" ( সূরা হুজরাত-১১)
⭕ "পরনিন্দা করো না" (সূরা হুজরাত-১২)
⭕ "ভিক্ষুকদের ধমক দিয়ো না"(সুরা দুহা-১০)
একজনকে দেখলে আপদমস্তক মানুষ হলেও তার ভিতর যদি উপরোক্ত গুনসমূহ না থাকে তাহলে সে মানুষ রূপে গন্য হয় না। নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত যেমন আল্লাহতায়ালার হুকুম ঠিক তেমনী উপরের আয়াত গুলোও আল্লাহর হুকুম। কেউ যদি এই আয়াতগুলো অমান্য করে তাকে অবশ্যই.......
যাহারা আল্লাহ তায়ালার উপরোক্ত হুকুম গুলো মানবে তারাই প্রকৃত পক্ষে "মানুষ"।
মহান আল্লাহতায়ালার এই পবিত্র নির্দেশনা সমূহ যুগে যুগে আল্লাহর প্রিয় বন্ধুগণ এবং বর্তমান যামানায় আমার হযরত পীর কেবলাজান ছাহেব শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন। আমার পীর কেবলাজান কখনো কারো নিন্দা করেন নি এবং আমাদের কে শিক্ষা দিলেন,"কাহারও নিন্দা করা, অনিষ্ট করা ও কাহাকেও অভিসম্পাত করা বোজর্গণের নিষেধ।" তিঁনি কাউকে হিংসা করতে না এবং আমাদেরকে শিক্ষা দিলেন,"কাহাকেও হিংসা করিওনা। কারন তোমরা হিংস্র জন্তু নও।" তিঁনি কখনো উচ্চ স্বরে কাউকে ধমক দেন নি। তিঁনি প্রেম-প্রীতি-সৌহার্য ও ক্ষমাশীলতার অন্যন দৃষ্টান্ত। কাউকে তুমি বলেও সম্বোধন করতে না। "
মানুষ হওয়ার শিক্ষা আমার দয়াল পীর দস্তগীর সারাটা জীবন ভর দিয়ে গেছেন। তিঁনার পবিত্র কদমে থেকে "মানুষ" না হতে পারাটা বড়ই দুর্ভাগ্য।
মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সহি বুজ দান করুন,আমিন।
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন