খালি পায়ে হাঁটা শরীরের জন্য যেমনি উপকারী ঠিক তেমনী হযরত রাসূল (সাঃ) পবিত্র সুন্নাত।
গবেষনায় দেখা যায় খালি পায়ে হাঁটলে রক্তচাপ কমে, পায়ের নিচের স্নায়ুগুলো বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো সহ অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
হযরত রাসূল (সাঃ) এর প্রতিটি সুন্নাতই সমগ্র মানবজাতীর জন্য আর্শীবাদ স্বরুপ ও উপকারী।
Bishwa Zaker Manzil - বিশ্ব জাকের মঞ্জিল আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) স্বীকৃত দরবার। এই পবিত্র দরবার শরীফে রাসূল পাক (সাঃ) এঁর সকল সুন্নাতের ই অনুসরন করা হয়। খালি পায়ে হাঁটা সম্পর্কে শাহসূফী হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব ফরমান, "পীরের দরবারে নগ্ন পায়ে চলিবে। ইহাই মুরিদের জন্য উত্তম।"
আপন পীরের দরবারে খালি পায়ে হাঁটাটা আদবের অংশ। সম্মানীত এবং পবিত্র স্থান সমূহে খালি পায়ে হাঁটা উত্তম। যেমন হযরত মুসা (আঃ) তুর পাহাড়ে যখন মহান খোদাতায়ালার সাথে স্বাক্ষাতে গেলেন তখন আল্লাহপাক বললেন, হে মুসা! এটা পবিত্র স্থান, তুমি জুতা খোলে নাও।"
হযরত জাওহারি (রঃ) মদীনা শরীফে দীর্ঘ সফরে রওয়ানা হলেন। যখন মদিনার কাছাকাছি পৌঁছে শহরের ঘরবাড়ী দৃষ্টিগোচর হল, তখন তিনি বাহন থেকে নেমে পড়লেন এবং খালি পায়ে হাঁটা শুরু করলেন ও বলতে লাগলেন, "আমরা বাহন থেকে নেমে পড়লাম এবং সেই মহিয়ান সত্তার সম্মানার্থে পায়ে হাটতে লাগলাম, বাহনে আরোহিত অবস্থায় জেয়ারত অবশ্যই আদব পরিপন্থী।"
দেওবন্দ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতা কাসেম নানুতুবি সাহেব মদিনায় গেলে কখনও জুতা পরতেন না। তাকে মানুষজন প্রশ্ন করতো আপনি জুতা পরিধান করেন না কেন? উত্তরে তিনি বলতেন, "যে ভুমিতে আমার মনিব (সাঃ) এর বরকতপূর্ণ পদচিহৃসমূহ বিদ্যমান তা আমি নিজ জুতো দ্বারা কিভাবে মাড়াতে পারি? এটা তো সম্পূর্ন বেয়াদবী।"
পবিত্র হাদিস শরীফে দেখা যায়, "রাসূল (সাঃ) মাঝেমধ্যে খালি পায়ে হাঁটার নির্দেশ করেছেন।" এই হাদিসের ব্যাখ্যায় গ্রন্থে বলা হয়েছে, "মাঝে মাঝে খালি পায়ে হাঁটলে বিনয় আসে, অহমিকা দূর হয় এবং এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।"
আর এই বিনয়, অহমিকা সম্পর্কে আল্লাহপাক বলেন,
"পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ কোনো দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন করো এবং কন্ঠস্বর নিচু করো। নিশ্চয় গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর।"
-সূরা-লোকমান।
"রহমানের বান্দাতো তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে।"
সূরা-ফুরকান।
আপন পীরের দরবারে খালি পায়ে হাঁটার ফজিলত সম্পর্কে শাহসূফী হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের পবিত্র নসিহত শরীফ ১ম খন্ড থেকে জানা যায়, " হযরত বশির হাফী (রহঃ) ছাহেবের পীর হযরত হাসান বসরী (রহঃ) ছাহেব যেদিন বশির হাফী (রহঃ) ছাহেবকে তাহাজ্জুয়ে এত্তেহাদি প্রদান করেন সেদিন হযরত হাসান বসরী (রহঃ) খালি পায়ে ছিলেন। পীর প্রতি আদব রক্ষার্তে হযরত হাফী (রহঃ) আর কখনো জুতা পরিধান করেন নাই। পীরের প্রতি এমন আদব প্রদশর্নের কারনে তিনি যেই রাস্তায় চলাচল করতেন ঐ রাস্তায় পশু-পাখি মলমুত্র ত্যাগ করা বন্ধ করে দেয়।"
হযরত পীর কেবলাজান আরো ফরমান,
"পীরের দায়েরাকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা মুরিদের কর্তব্য। এখানে জাকেরান সকল আল্লাহর জেকের করে। মনে রাখিবে, "পীরের দরবারের ধুলাবালি আশেকানের চোখের সুরমা। কাজেই পীরের দরবারে ইজ্জতের খাতিরে তথায় জুতা-সেন্ডেল পায়ে না দেওয়াই উত্তম।"
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন