| | বঙ্গাব্দ

আমার প্রানের বান্ধব

 

১৯শতকের প্রথম দিকে শেরপুর জেলার পাকুরিয়া গ্রামে হযরত আলীমুদ্দিন ছাহেবের ঘর আলোকিত করে দুনিয়ায় আগমন করলেন মহা মানব আমার প্রানের বান্ধব খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব।
আমার প্রানের বান্ধব

দশ বছর বয়সে উপমহাদেশের বিখ্যাত আউলিয়া হযরত খাজা এনায়েতপুরী (রহ:) ছাহেবের কদমে শুরু হয় খোদাপ্রাপ্তির সাধনা। দীর্ঘ ৪৪ বছর পীরের কদমে খেদমত করে আপন পীরের হুকুমে চলে আসেন ফরিদপুর জেলার সদরপুরের আটরশিতে।
সেখানে গড়ে তুলেন "জাকের ক্যাম্প"।
"জাকের ক্যাম্প" থেকে শুরু হয় খোদাতালাশীদের শিক্ষাদান।
তিঁনি কাউকে ধমক দিতেন না, কারো উপর রাগও করতেন না, কাউকে অভিশাপ দিতেন না।
অনাহার ছিলো তিঁনার নিত্য দিনের সঙ্গি। দুপুর বেলা এক চামচ ভাত সেই সঙ্গে যতসামান্য তরকারি আহার করতেন।
তিঁনি বলেন, "বাবা! একজন খানা খান না আরেকজন ভোগবিলাসী, তাদের কি বন্ধুত্ব হতে পারে?
কিন্তু মেহমানদারীতে তিঁনি ছিলেন অতুলনীয় ও অকল্পনীয় আন্তরিক। মেহমানদারির জন্য গড়ে তুলেছেন দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মেহমানখানা। যেখানে লক্ষ লক্ষ একসাথে খাবার গ্রহন করতে পারে।
প্রিয় মুরিদ সন্তানদের প্রথম সাক্ষাতেই বলতেন,
" বাবা! খাইছেন? যান বাবা খেয়ে আসেন।"
আমাদেরকে প্রানাধিক ভালোবাসেন দয়াল বাবা। জাকের ভাইয়া খাবার খেয়ে এসে গ্রিল ধরে তিঁনার দিকে তাকিয়ে কাঁদতো। মুরিদ সন্তানগণের চোখের পানি দেখে তিঁনি বলতেন,
" তোমরাই যদি কাঁদবা আল্লাহ আমাকে বাঁচায়া রাখছে কেন?"
মুরিদের দুঃখ-বেদনায় তিঁনি আহার-নিদ্রা পরিত্যাগ পূর্বক মহান খোদাতায়ালার নিকট অশ্রু সিক্ত নয়নে দু'হাত তুলে রাখতেন।
মহান খোদাতায়ালার নিকট বলতেন,
"হে খোদা! আমার মুরিদের পেটে খাবার নাই, বস্ত্র নাই, আল্লাহ আমার মুরিদের দুঃখ দুর্দশা দূর করে দাও।"
এক সন্ধ্যায় আমার এক জাকের ভাইয়ের পেটের পীড়া হলো। দয়াল পীর দস্তগীর তাকে রাতের খাবার খেতে বারন করলেন। জাকের ভাই কেবলাজানের হুকুমে রাতে আর কিছুই খেলেন না। অনাহারে থাকলেন। সকাল বেলা ফজরের নামাজের পরে পীর কেবলাজান এক গ্লাস হরলিক্স হাতে নিয়ে হুজরা শরীফের সামনে এসে ঐ জাকের ভাইকে খুজতে লাগলেন। জাকের ভাই আসতে আসতে প্রায় আধ ঘন্টা সময় লাগলো। আমার পীর কেবলাজান ততক্ষন প্রিয় মুরিদের জন্য হরলিক্সের গ্লাস দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমার প্রানের বান্ধবের মত মুরিদের কে ভালোবাসেন এমন পীর দুনিয়াতে আসে নাই আর আসবেও না।
আমার আঁকা, প্রানের বান্ধব ২০০১ সালের ১লা মে আমাদের কে এতিম করে দারুল বাকায় তাসরিফ নেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন